পরকীয়া প্রেমে বাধা দেওয়ায় মাসুদ হাসান রনজু’কে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা।।ঘটনার সাথে জড়িত ০২জন আসামী গ্রেফতার। উদ্ধার-হত্যার কাজে ব্যবহৃত কোদাল
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধিঃ
বায়েজিদ জোয়ার্দার
চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদা মডেল থানাধীন বদনপুর গ্রামস্থ আজিজুল হক এর ছেলে ভিকটিম মাসুদ হাসান রনজু(২৬)কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখ সকাল আনুমানিক ০৯টায় ভুট্টা ক্ষেতে সেচ দেওয়ার উদ্দেশে বাড়ী থেকে বের হয়। ভিকটিম দুপুরে বাড়ীতে ফিরে না আসায় বদনপুর (ঘোলার বাগান) মাঠে ভিকটিমের পিতা বিকাল ০৩:৩০ ঘটিকায় খাবার নিয়ে যেয়ে ডাকাডাকি করে না পেয়ে খাবার নিয়ে বাড়ীতে ফিরে আসে।সন্ধ্যা নামলে ভিকটিম বাড়ীতে ফিরে না আসলে ভিকটিমের পিতা ও প্রতিবেশী লোকজনসহ ভুট্টা ক্ষেতের চারিদিকে তল্লাশীকালে ভিকটিমের পিতা ভুট্টা ক্ষেতের মাঝে ভিকটিম রঞ্জুর রক্তাক্ত মরদেহ পেয়ে কান্নাকাটি শুরু করলে সবাই এগিয়ে আসে দেখে ধারালো অস্ত্রদ্বারা কে বা কাহারা উপর্যুপরি কুপিয়ে হত্যা করে লাশ ফেলে গিয়েছে। বর্ণিত ঘটনার বিষয়ে ভিকটিম রঞ্জু’র পিতা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে দামুড়হুদা মডেল থানার মামলা নং-০৬ তারিখ ১৭/০২/২০২৫ ধারা-৩০২/৩৪ পেনাল কোড রুজু করেন।
চুয়াডাঙ্গা জেলার পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মওলা, বিপিএম-সেবা তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং ঘটনার মূলরহস্য উদঘাটনসহ ঘটনার সাথে জড়িত আসামীদের গ্রেফতারের জন্য প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। পুলিশ সুপার দিকনির্দেশনায় চুয়াডাঙ্গা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(ক্রাইম এ্যান্ড অপস) কনক কুমার দাস ও সহকারি পুলিশ সুপার(দামুড়হুদা সার্কেল),জাকিয়া সুলতানা নেতৃত্বে জেলা পুলিশের একাধিক টিম ঘটনার মূলরহস্য উদঘাটন এবং ঘটনার সাথে জড়িত প্রকৃত আসামীকে গ্রেফতারের লক্ষে মাঠে নামে। হত্যার ঘটনা পারিপার্শ্বিক পর্যালোচনা করে ডিবি ও দামুড়হুদা থানা পুলিশ
অদ্য ১৮/০২/২০২৫ ইং রাত ১২:৩০ ঘটিকায় ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে সন্দিগ্ধে আসামী হুমায়ুন কবির’কে পুলিশ হেফাজতে গ্রহণ করে।
আসামী হুমায়ুন কবিরকে নিবিড় জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে,সে অবিবাহিত কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। একই এলাকার মিজানুর রহমানের সাথে ভাল সম্পর্ক মিজানের স্ত্রী মোছাঃ শাহানাজ সুলতানা'র সাথে আমার ভাল সম্পর্ক তৈরি হয়।শাহানাজ সুলতানা'র সাথে একপর্যায়ে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয়। একই এলাকার মাসুদ হাসান রনজু শাহানাজ'র মেয়েকে প্রাইভেট পড়াতো। রনজু বিশেষ কায়দায় শাহানাজ ও আমার মধ্যে কখন কি কথা হয়, সে বিষয়টি রনজু জেনে যেত। রনজু শাহানাজ ও আমার মধ্যে মোবাইল ফোনে কথা বলার বিষয়টি শাহানাজ এর স্বামীর পরিবার সহ স্থানীয় লোকজনকে জানায়। ঘটনার ৫/৬ দিন পূর্বে রাত অনুমান ০৯:০০ ঘটিকার দিকে শাহানাজ আমার মোবাইলে ফোন দিয়ে বলে যে, রনজু আমাদের কথাবার্তা রেকর্ড করে রাখছে। তাকে মেরে ফেলতে হবে, আমি বলি ঠিক আছে, মেরে ফেলব। সে আরও বলে মারতে পারলে, আমার সাথে কথা বলবা, না পারলে কথা বলবা না। উক্ত কারণে আমি রনজু'কে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করি। পরিকল্পনা মোতাবেক ঘটনার দুই-একদিন আগে আমি রনজু'কে বলি, আমি আগ্রামী ১৬/০২/২০২৫ তারিখ রবিবার আমার ভুট্টা ক্ষেতে পানি দেব। তখন রনজু বলে যে, আমিও আমার ভুট্টা ক্ষেতে পানি দেব। সে মোতাবেক গত১৬/০২/২০২৫ তারিখ রবিবার সকাল অনুমান ০৯:০০ ঘটিকার দিকে আমি আমার ভুট্টা ক্ষেতে পানি দিতে যাই এবং রনজু'ও তার জমিতে পানি দেওয়ার জন্য আসে। আমার জমিতে পানি দেওয়া শেষে বেলা অনুমান ১২.০০ ঘটিকার দিকে রনজু তার জমিতে পানি দেওয়া শুরু করে ক্যানেল কেটে ভূট্টা ক্ষেতের মধ্যে যেতে থাকে। ঐ সময় আমি রনজু'র পিছনে পিছনে ভূট্টা ক্ষেতের ভিতরে যেয়ে পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক পিছন থেকে কোদাল দিয়ে রনজু'র মাথার বাম পার্শ্বে স্বজোরে আঘাত করলে রনজু কাত হয়ে মাটিতে পড়ে যায়। পরবর্তীতে আমি রনজু'কে দুই'টি কোপ দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে কোদাল ক্যানেলের মধ্যে রেখে বাড়ীতে চলে আসে। গ্রেফতারকৃত আসামী হুমায়ুন কবির ঘটনা সংক্রান্তে বিজ্ঞ আদালতে দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের নাম ঠিকানাঃ
১। মোঃ হুমায়ুন কবির(৪১), পিতা-মৃত নুর ইসলাম ২। শাহানাজ সুলতানা(২৭), স্বামী- মোঃ মিজানুর রহমান, উভয় সাং-বদনপুর, থানা-দামুড়হুদা, জেলা-চুয়াডাঙ্গা।
উদ্ধারকৃত আলামতঃ
ক) হত্যার কাজে ব্যবহৃত কোদাল।