মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫, ১০:০৫ অপরাহ্ন
Title :
টোনা,বড়দিয়া,খাশিয়াল এলাকার মুক্তিযুদ্ধ চুয়াডাঙ্গায় হতদরিদ্র মানুষের বিনামূল্যে গাভী বিতরণ সিরাজগঞ্জে বেলকুচি উপজেলায় রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বীর মুক্তিযোদ্ধার দাফন সম্পন্ন জুলাই ১0/২০২৫ বাঘাইছড়িতে বিজিবির অভিযানে আগর কাঠ জব্দ বাঘাইছড়িতে শহীদ জিয়ার শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে পৌর কৃষক দলের বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির যুবকদের নিজ অর্থায়নে কবরস্থানের মাটি ভরাট ও বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ। নিজ অর্থায়নে রাস্তা মেরামত করলেন বিএনপির নেতা ইকবাল হোসেন বাঘাইছড়িতে বন্যার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে আশিকার মানবিক সহায়তা আলফাডাঙ্গায় ৮ম শ্রেণীর মাদ্রাসা ছাত্রী ধর্ষণের শিকার চুয়াডাঙ্গায় বিদেশী পিস্তল ও দেশীঅস্ত্র সহ যুবদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক গ্রেফতার

টোনা,বড়দিয়া,খাশিয়াল এলাকার মুক্তিযুদ্ধ

গাজী মনজুরুল ইসলাম, বিশেষ প্রতিনিধি, দৈনিক আমার সোনার বাংলা
  • Update Time : মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই, ২০২৫
  • ১ Time View

টোনা,বড়দিয়া,খাশিয়াল এলাকার মুক্তিযুদ্ধ :
লেখায়:দিলরুবা ইয়াসমিন (শিক্ষক)।

গাজী মনজুরুল ইসলাম, বিশেষ প্রতিনিধি, দৈনিক আমার সোনার বাংলা।
টোনা-বড়দিয়া ম্যসাকার ;এক হারিয়ে যাওয়া ইতিহাস। বঙ্গ।বন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষনা ও ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের অব্যবহিত পরে বাংলাদেশের অধিকাংশ স্হানের ন্যায় যশোর, নড়াইল,লোহাগড়া, গোপালগঞ্জ ইত্যাদি এলাকায় পাক বাহিনীর সামরিক অভিযানের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ শুরু হয়। অবসরে ও ছুটিতে থাকা সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য, ইপিআর, পুলিশ, আনসার, ছাত্র,কৃষক ও শ্রমিকসহ আপামর জনতা পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলে।১ মে ৭১ তারিখে গোপালগঞ্জ থেকে মধুমতি নদী দিয়ে পাকসেনারা একটি লঞ্চযোগে খুলনা অভিমুখে যাচ্ছিলো।সংবাদ পেয়ে নদীর উত্তর পাড়ে তালা নামক স্হানে ক্যাপ্টেন হালিমের (পরবর্তীতে জেনারেল) নেতৃত্বে মুক্তি যোদ্ধারা পাক বাহিনীর উক্ত লঞ্চ আক্রমন করে। নদীর দক্ষিন পার্শ্ব থেকে হেমায়েত মুন্সীর নেতৃত্বে অন্য একটি দল আক্রমন চালালে প্রায় দুই ঘন্টাব্যাপী যুদ্ধের পর পাকবাহিনী পর্যুদস্ত হয়। এই যুদ্ধে বেশ কিছু পাকসেনা নিহত হয় বাকিরা আত্মসমর্পন করে। এই পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে পরেরদিন ২ মে তারিখে খুলনা থেকে কয়েকটি গানবোট ও লঞ্চ যোগে পাকবাহিনী মধুমতি নদীর দক্ষিন তীর সংলগ্ন সকল গ্রাম অর্থাৎ পূর্বে জয়নগর, পশ্চিমে বড়দিয়া, দক্ষিনে পাটনা পর্যন্ত এ এলাকায় তীব্র সামরিক অভিযান পরিচালনা করে।একটি সৈন্যের দল গানবোটসহ নবগঙ্গা নদীর তীরে বড়দিয়া বাজারে অবস্হান নেয়, দ্বিতীয় একটি দল জয়নগর বাজারে পৌঁছানোর পর শুরু হয় চিরুনী অভিযান। সৈন্যরা জয়নগর বাজারে নেমে স্হল পথ ধরে বড়দিয়া বাজার অভিমুখে গুলি করতে করতে অগ্রসর হতে থাকে। পথিমধ্যে ঘরবাড়ি বর্নিত গ্রামগুলির কিছু কিছু ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়।আওয়ামীলীগ, মুক্তিবাহিনী ও হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক পেলে নির্বিচারে হত্যা করে। সকাল থেকেই শুরু হয় তাদের অপারেশন। এক নাগাড়ে বৃষ্টির মত গোলাবর্ষন চলতে থাকে। বড়দিয়া ও জয়নগরে রাখা গানবোট থেকে ভারী অস্ত্র দিয়ে গোলা ছোঁড়া হয়। মধুমতি নদীতে টহলরত লঞ্চ থেকে মুহুর্মুহু গুলি ছোড়া হয়। বৃস্টির মত গোলাগুলি করতে করতে অগ্রসর হতে থাকে। পাক বাহিনী অভিযান কালে যেখানে হিন্দুধর্মী মানুষ পেয়েছে তাদের হত্যা করেছে, তাদের বাড়ি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। খন্দকার পাড়ার সকল লোকজনকে মোজাম্মেল হক সাহেব নিচু স্হানে নিরবে লুকিয়ে থাকতে পরামর্শ দেন। গ্রামের সকল মানুষ গোলাগুলি থেকে বাঁচার জন্য নির্জন বাগানের মধ্যে পানি শুন্য কুয়ায় আশ্রয় নেয়।তবে সে বছর বিলম্বিত বর্ষার কারনে গ্রামের সকল বড় বড় কুয়ো গুলি সকলই শুকনা ছিল। যে যেখানে পারে বন জংগলে গিয়ে গোলাগুলি থেকে বাঁচার চেস্টা করে। টোনা গ্রামের নবীর উদ্দিন সর্দারের বাড়ির পূর্ব পাশের বাগানের মধ্য এমন একটি বড় কুয়োর মধ‍্যে নারী পুরুষ ও শিশু সহ ৫০/৬০ জনের মত লোকজন আশ্রয় নিয়েছিল। গোলাগুলির মধ‍্যে হঠাৎ দেখা যায় একজন খান সেনা একটা এলএমজি হাতে ঐ কুয়ার পাশেই উপস্হিত। সৈন‍্যটি দ্রুত কুয়োর উত্তর পাশ দিয়ে নবীর সর্দারের উঠানে উপস্হিত হলে খবীর সর্দারের স্ত্রী নিজেল বিবি তার সামনে পড়ে গেলে তিনি ভয়ে মিলিটারী মিলিটারী বলে চিৎকার করে দৌড়াতে শুরু করে। সৈন্যটিও তার পেছনে পেছনে “লা মারে, লা মারে” বলতে বলতে দৌড়াতে থাকে।খবীর সর্দারে স্ত্রী আরও জোরে চিৎকার করতে করতে টোনা খন্দকার পাড়া মসজিদের মাঠে পৌঁছালে ঐ খান সেনা অস্ত্র উঁচু করে গুলি করতে উদ্যত হয়। মৌলভী সাহেব একাকী মসজিদে অবস্হান করছিলেন। এই দৃশ্য দেখা মাত্র তিনি নারায় তাকবীর, আল্লাহু আকবার বলে দৌড়ে গিয়ে দিয়ে এক হাত দিয়ে তার অস্ত্র উঁচু করে ধরে স্পস্ঠ উর্দূতে বললেন হে জওয়ান তুমি এ কী করছো! এতো অবলা এক নারী, একে মারতে উদ্যত হয়েছ কেন ? তার মুখে স্পষ্ট উর্দূ শুনে সৈনিকটি ক্ষনিকের জন্য থামে এবং গুলি না করে বললো ও কে বললাম মারবোনা অথচ ও দৌড়াচ্ছে কেন।পাক আর্মি একটু শান্ত হয়ে তাকে জিজ্ঞেস করেন তাদের অন্য জওয়ানদের দেখেছে কিনা এবং এখানে আওয়ামীলীগার, মুক্তিবাহিনী ও হিন্দু লোক আছে কিনা। হাজী সাহেব বললেন “দেখুন অফিসার! আমার এক পা কবরে গেছে আর এক পা দুনিয়ায় আছে, আমি তোমাকে মিথ‍্যা বলব না। এখানে কোন মুক্তি বাহিনী নেই, আওয়ামীলীগার ও হিন্দুরা এখানে ছিল তবে তারা সকলেই ইন্ডিয়া চলে গেছে।মূলত খাশিয়াল গ্রাম থেকে মার্চ করার পর এই সৈনিক দল ছুট হয়ে পড়েন। তার দলের আরও ৩/৪ জন খাশিয়াল-টোনার প্রধান রাস্তা ধরে অগ্রসর হচ্ছিলেন। হাজী সাহেব সৈনিককে নিয়ে তার বাড়ির আংগিনায় এসে একটা চেয়ার দিয়ে বসতে দিলেন। হাজী সাহের শ‍্যালক তার বাড়িতেই ছিলেন, তার ডাক নাম ঝন্টু ঝন্টু ধরে ডাকলে তার বাড়ির পুর্ব পাশের জংগল থেকে তাদের কাছে গেলে তিনি নারকেল গাছ থেকে ডাব পাড়তে বললেন। ডাব পাড়া হলে সৈনিক ২ টা ডাব খেলেন। উল্লেখ‍্য, হাজী সাহেব খুলনায় পোর্ট কিন্ডারগার্টেন স্কুলে শিক্ষকতা করতেন, ঐ স্কুলে অধিকাংশ ছাত্র ছাত্রী ছিল পশ্চিম পাকিস্তানী বিশেষ করে পাক নৌবাহিনী কর্মকর্তা কর্মচারীদেরদের সন্তান সন্ততি।ঐ স্কুলের সভাপতি ছিলেন পোর্টের ডাইরেক্টর নেভীর ক‍্যাপ্টেন গুলজারন। সৈনিকের সাথে আলাপে এ সকল কথা উঠে এলে এবং হাজী সাহেবের উর্দু উচ্চারণে মুগ্ধ হয়ে ক্ষনিকের জন‍্য উক্ত সৈনিকের বিশ্বাসভাজন হয়ে ওঠেন।সৈনিক হাজী সাহেবকে মসজিদটি দেখিয়ে জানতে চান মসজিদটি কত আগে প্রতিস্ঠিত হয়েছে, উত্তরে তিনি জানান আগে এখানে কাঁচা একটা মসজিদ ছিল, এটার বয়স ২০/২৫ বছর, তবে অনতি দুরে গ্রামের পুরাতন মসজিদের বয়স ১০০ বছরের বেশী হবে। একথা শুনে সৈনিক বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন তাদের জানান হয়েছে এখানে শুধুই হিন্দুরা বাস করে। হাজী সাহেবের কথায় ও ব‍্যবহারে আশ্বস্ত হয়ে প্রধান সড়ক দেখিয়ে দিতে বললেন এবং তিনি একটি ফাঁকা গুলি করলেন। গুলির শব্দে অল্প সময়ের মধ্যে দুরে থাকা তার দুজন সহ যোদ্ধারা এলেন অতপর প্রধান সড়কের দিকে রওনা হলে পথিমধ‍্যে তার ভাইয়ের ছেলে খন্দকার জহুরুল হকের সাথে দেখা হলে তাকে সৈনিক দল কে প্রধান সড়কে পৌঁছে দিতে বলেন। ইতমধ‍্যে সৈনিকগণ গোলাগুলি বন্ধ হওয়ায় আশ্রয় থেকে বের হয়ে তাদের সাথে করে টোনা গ্রাম ছেড়ে ১ মাইল পশ্চিমে বড়দিয়া বাজারে তাদের মুল বাহিনীর উদ্দেশ্যে রওনা হলেন। হাজী সাহেবের জীবনের ঝুঁকি সত্ত্বেও তার সাহসিকতার সাথে

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2025 Coder Boss
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102