শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:৫৩ অপরাহ্ন
Title :
জাতীয় প্রাণী সম্পদ সপ্তাহ ও প্রদর্শনী মেলা ২০২৫ দৌলতপুর কুষ্টিয়া কাজিপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধার বসতবাড়িতে চুরি স্বর্ণালংকার নগদ অর্থ সহ ২৮ লাখ টাকার মালামাল লুট। ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের আর্থিক সংকট “আন্ডার রেট” প্রতিযোগিতায় বছর ঘুরতে না ঘুরতেই দেউলিয়া হয়ে পড়ছেন তারা ঔষধ কোম্পানিতে ১৬ ঘণ্টা ডিউটি! শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ দৌলতপুরে ”আমাদের দিন” পত্রিকার অফিস উদ্বোধন মাহিরা সোনার জন্মদিন আজ 💖 সাংবাদিক কুপিয়ে হত্যার প্রতিবাদে প্রেসক্লাব আলফাডাঙ্গার মানববন্ধন অনুষ্ঠিত সাংবাদিক তুহিন হত্যার প্রতিবাদে বাঘাইছড়ি প্রেসক্লাবের মানববন্ধন বাঘাইছড়িতে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস ২০২৫ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত টোনা,বড়দিয়া,খাশিয়াল এলাকার মুক্তিযুদ্ধ

ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের আর্থিক সংকট “আন্ডার রেট” প্রতিযোগিতায় বছর ঘুরতে না ঘুরতেই দেউলিয়া হয়ে পড়ছেন তারা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : রবিবার, ৯ নভেম্বর, ২০২৫
  • ৩৩ Time View

ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের আর্থিক সংকট

“আন্ডার রেট” প্রতিযোগিতায় বছর ঘুরতে না ঘুরতেই দেউলিয়া হয়ে পড়ছেন তারা

নিজস্ব প্রতিবেদক:
দেশের ঔষধ শিল্প বাংলাদেশের অর্থনীতিতে অন্যতম শক্তিশালী খাত হিসেবে বিবেচিত হলেও, এর মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করা মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ (MR) বা বিক্রয় প্রতিনিধিদের জীবন এখন দুঃসহ হয়ে উঠেছে। একদিকে দীর্ঘ সময়ের কর্মঘণ্টা, অন্যদিকে কোম্পানিগুলোর অমানবিক লক্ষ্যচাপ ও ‘আন্ডার রেট’ প্রতিযোগিতা—সব মিলিয়ে আর্থিকভাবে ধ্বংসের মুখে পড়ছেন তারা।

📉 আন্ডার রেটের ভয়াবহ প্রতিযোগিতা

বর্তমানে বাজারে প্রতিযোগিতা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, এক কোম্পানির প্রতিনিধি অন্য কোম্পানির প্রতিনিধির চেয়ে কম দামে পণ্য বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে সাময়িকভাবে বিক্রয় বাড়লেও, শেষ পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন প্রতিনিধিরাই।
অনেক সময় কোম্পানির দেওয়া বোনাস, কমিশন বা ইনসেনটিভও এই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে যথেষ্ট নয়। ফলে বছর না ঘুরতেই অনেক প্রতিনিধি ঋণের জালে জড়িয়ে পড়ছেন এবং দেউলিয়া হয়ে পড়ছেন।

একজন সিনিয়র প্রতিনিধি জানান,

> “আমরা দিন রাত পরিশ্রম করি, ডাক্তারের পেছনে সময় দিই, কিন্তু বাজারে আন্ডার রেটের কারণে লাভ তো দূরের কথা, নিজের খরচও উঠে না। অনেকে এখন পেশা ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন।”

 

🕒 অমানবিক কর্মঘণ্টা ও মানসিক চাপ

বেশিরভাগ প্রতিনিধিদের সকাল ৮টা থেকে রাত ১১টা বা ১২টা পর্যন্ত কাজ করতে হয়। সরকারি শ্রম আইন অনুযায়ী প্রতিদিন ৮ ঘণ্টার বেশি কাজ করানো আইনত দণ্ডনীয় হলেও, এই খাতে তার কোনো প্রয়োগ নেই।
প্রতিদিন ডজনখানেক ডাক্তারের সঙ্গে দেখা করা, বিভিন্ন ক্লিনিক ও ফার্মেসি ভিজিট করা, টার্গেট পূরণে রিপোর্ট পাঠানো—এসবের কারণে বিশ্রামের সময়ও পান না তারা।

💬 বিশেষজ্ঞ মত

শ্রম বিষয়ক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে ঔষধ কোম্পানিগুলোর মধ্যে ন্যায্য প্রতিযোগিতা ও কর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত না হলে এই শিল্পের ভেতরে বড় ধরনের সামাজিক ও আর্থিক সংকট তৈরি হতে পারে।

শ্রম বিশেষজ্ঞ মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন,

> “এই খাতে কোনো নির্দিষ্ট ন্যূনতম কমিশন বা বিক্রয় হার নেই। ফলে কোম্পানিগুলো নিজেদের স্বার্থে দাম কমিয়ে প্রতিযোগিতা চালাচ্ছে, যার সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী হচ্ছেন মাঠ পর্যায়ের বিক্রয় প্রতিনিধিরা।”

 

⚖️ প্রয়োজন সরকারি নজরদারি

বিশ্লেষকরা মনে করেন, এখনই এই অস্থিতিশীল বাজারে সরকারের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। প্রতিটি কোম্পানিকে ন্যূনতম কমিশন হার, কর্মঘণ্টা নির্ধারণ, বীমা ও স্বাস্থ্যসুবিধা দেওয়ার জন্য বাধ্যতামূলক করা উচিত।
এছাড়া আন্ডার রেট বিক্রি রোধে কোম্পানিগুলোর মধ্যে সমন্বয় এবং আইনগত নিয়ন্ত্রণ আরোপের আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

📢 প্রতিনিধিদের দাবী

দেশের বিভিন্ন জেলায় কর্মরত মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভরা সরকারের কাছে কিছু স্পষ্ট দাবি জানিয়েছেন—

1. আন্ডার রেট বিক্রি বন্ধে কঠোর আইন প্রণয়ন।

2. মাসিক ন্যূনতম বেতন ও কমিশন নিশ্চিত করা।

3. শ্রম আইন অনুযায়ী কাজের সময় নির্ধারণ।

4. বিক্রয় প্রতিনিধিদের জন্য কল্যাণ তহবিল ও বীমা সুবিধা চালু করা।

 

🔚 উপসংহার

ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা দেশের স্বাস্থ্যখাতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। কিন্তু আজ তারা নিজেদেরই টিকিয়ে রাখতে হিমশিম খাচ্ছেন।
“আন্ডার রেট” প্রতিযোগিতা বন্ধ না হলে এবং সঠিক নীতিমালা প্রণয়ন না করা হলে, অচিরেই এই খাতে কর্মরত হাজারো মানুষ দেউলিয়ার পথে হাঁটতে বাধ্য হবেন — যা পুরো ঔষধ বাজারে অস্থিতিশীলতা তৈরি করবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2025 Coder Boss
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102